সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করযোগ্য আয়
সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মূল বেতন, উৎসব ভাতা ও বোনাস (যে নামেই অভিহিত হোক না কেনো) করযোগ্য আয় হিসেবে বিবেচিত হবে।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করমুক্ত আয়
অবসরকালে প্রদত্ত লাম্প গ্র্যান্টসহ কেবল সরকারি বেতন আদেশে উল্লেখিত অন্যান্য ভাতা ও সুবিধাদি যেমন, বাড়ি ভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা, শ্রান্তি বিনোদন ভাতা, বাংলা নববর্ষ ভাতা ইত্যাদি করমুক্ত থাকবে
আয়কর আইন ২০২৩ অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরজনিত সুবিধার উপর কোনো আয়কর দিতে হয় না।
পাশাপাশি বাড়ি ভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা, শ্রান্তি বিনোদন ভাতা, বাংলা নববর্ষ ভাতা ইত্যাদির উপর কোনো কর পরিশোধ করতে হয় না। এছাড়াও বেশি কিছু খাত রয়েছে যেগুলোতে তাদের কর অব্যাহতি রয়েছে।
তবে, “নির্ধারিত কর দিবসের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে করমুক্ত এসব সুবিধা বাতিল হবে। তখন এসব সুবিধার জন্যও তাদের কর দিতে হবে”।
এছাড়া সরকারি চাকরিজীবী করদাতা যদি চাকরির দায়িত্ব পালনের জন্য কোনো বিশেষ সরকারি ভাতা, সুবিধা বা আনুতোষিক পান সেক্ষেত্রে সেটির জন্য কর দিতে হবে না।
করমুক্ত আয় করদাতার মোট আয়ের অন্তর্ভুক্ত হবে না। এটি রিটার্নে করমুক্ত আয়ের কলামে প্রদর্শন করতে হবে।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে যেসব বিচারক নিয়োগ পান তারা ৩০ শতাংশ জুডিশিয়াল ভাতা পান। এই ভাতাও ট্যাক্স ফ্রি।
“উচ্চ আদালতের বিচারকদের বেতন ও বোনাস কোনো কিছুর উপরেই এখন ট্যাক্স দিতে হচ্ছে না।”
সরকারি কর্মকর্তারা যখন অবসরে যান তখন তারা একটা গ্রাচুইটি পান। এই গ্রাচুইটি করমুক্ত এবং, প্রভিডেন্ট ফান্ড যেটা তুলেন, যে ইন্টারেস্ট পান সেটাও করমুক্ত”।
“এছাড়াও, মাসিক যে পেনশন পান সেটাও ট্যাক্স ফ্রি। শুধু তাই নয়, এটা মোট আয়ের সাথেও যুক্ত হবে না। তার যদি অন্যান্য ইনকামও থাকে তাহলেও পেনশনের টাকাটা মোট আয়ের সাথে যুক্ত হবে না,” ।
সরকারি চাকুরি থেকে আয় রিটার্ন দাখিল ভিডিও টিউটোরিয়াল
চাকরি হইতে আয় - আইনে যা বলা আছে
৩২। (১) উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, চাকরি হইতে আয় অর্থে নিম্নবর্ণিত আয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা:-
(ক) চাকরি হইতে প্রাপ্ত বা প্রাপ্য যেকোনো প্রকার আর্থিক প্রাপ্তি, বেতন ও সুযোগ-সুবিধা;
(খ) কর্মচারী শেয়ার স্কিম হইতে অর্জিত আয়;
(গ) কর অনারোপিত বকেয়া বেতন; বা
(ঘ) অতীত বা ভবিষ্যতের কোনো নিয়োগকর্তা হইতে প্রাপ্ত যেকোনো অঙ্ক বা সুবিধা।
(২) নিম্নবর্ণিত প্রাপ্তিসমূহ চাকরি হইতে আয় এর অন্তর্ভুক্ত হইবে না, যথা:-
1[(ক) শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নহে এইরূপ অন্য কোনো কর্মচারীর হৃদযন্ত্র, বৃক্ক, চক্ষু, যকৃত ও মস্তিষ্ক সংক্রান্ত অপারেশন, কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন এবং ক্যানসার সংক্রান্ত চিকিৎসা ব্যয় বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;]
(খ) সম্পূর্ণরূপে এবং কেবল চাকরির দায়িত্ব পরিপালনের জন্য প্রাপ্ত এবং ব্যয়িত যাতায়াত ভাতা, ভ্রমণ ভাতা ও দৈনিক ভাতা 2[;]
3[(গ) কোম্পানি কর্তৃক গোষ্ঠী বীমা বাবদ কোনো কর্মচারীর পক্ষে বীমা কোম্পানিকে পরিশোধিত প্রিমিয়াম।]
ব্যাখ্যা।-এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে,
(ক) “বেতন” অর্থ কর্মচারী কর্তৃক চাকরি হইতে প্রাপ্ত যেকোনো প্রকৃতির অঙ্ক এবং নিম্নবর্ণিত বিষয় ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা:-
(অ) যেকোনো বেতন, মজুরি বা পারিশ্রমিক;
(আ) যেকোনো ভাতা, ছুটি ভাতা, ছুটি নগদায়ন, বোনাস, ফি, কমিশন, ওভারটাইম;
(ই) অগ্রিম বেতন;
(ঈ) আনুতোষিক, অ্যানুইটি, পেনশন বা ইহাদের সম্পূরক;
(উ) পারকুইজিট;
(ঊ) বেতন বা মজুরির পরিবর্তে প্রাপ্তি অথবা বেতন বা মজুরির অতিরিক্ত প্রাপ্তি;
(খ) “বেতন বা মজুরির পরিবর্তে প্রাপ্তি” অথবা “বেতন বা মজুরির অতিরিক্ত প্রাপ্তি” অর্থে অন্তর্ভুক্ত হইবে-
(অ) চাকরির অবসানের কারণে প্রাপ্ত যেকোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ, উহা যে নামেই অভিহিত হউক না কেন;
(আ) ভবিষ্য তহবিল বা অন্য কোনো তহবিলে কর্মচারীর অনুদানের অংশ ব্যতিরেকে অবশিষ্ট অংশ;
(ই) চাকরির চুক্তির শর্তাবলির পরিবর্তনের ফলে প্রাপ্ত অঙ্ক বা সুবিধাদির ন্যায্য বাজার মূল্য;
(ঈ) চাকরিতে যোগদানকালে বা চাকরির অন্য কোনো শর্তের অধীন প্রাপ্ত অঙ্ক বা সুবিধাদির ন্যায্য বাজার মূল্য;
(গ) “পারকুইজিট” অর্থ নিয়োগকর্তা কর্তৃক কর্মচারীকে প্রদত্ত ইনসেনটিভ বোনাসসহ যেকোনো প্রকারের পরিশোধ বা সুবিধা, তবে নিম্নবর্ণিত পরিশোধসমূহ ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না, যথা:-
(অ) মূল বেতন, বকেয়া বেতন, অগ্রিম বেতন, উৎসব ভাতা, ছুটি নগদায়ন ও ওভারটাইম;
(আ) স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিল, অনুমোদিত পেনশন তহবিল, অনুমোদিত আনুতোষিক তহবিল ও অনুমোদিত বার্ধক্য তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা;
4[(ই) কোম্পানি কর্তৃক গোষ্ঠী বীমা বাবদ কোনো কর্মচারীর পক্ষে বীমা কোম্পানিকে পরিশোধিত প্রিমিয়াম;]
(ঘ) “মূল বেতন” অর্থ মাসিক বা অন্য প্রকারে প্রদেয় বেতন যাহার ভিত্তিতে অন্যান্য ভাতা এবং সুবিধা নির্ধারিত হয়, তবে নিম্নবর্ণিত ভাতা বা সুবিধাদি ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না, যথা:-
(অ) সকল প্রকার ভাতা, পারকুইজিট, অ্যানুইটি, বোনাস ও সুবিধা; এবং
(আ) নিয়োগকর্তা কর্তৃক কর্মচারীর বিভিন্ন তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা;
(ঙ) “নিয়োগকর্তা” অর্থ যিনি নিয়োগ দান করিয়া থাকেন এবং বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করিয়া থাকেন বা নিয়োগকর্তার পক্ষে উক্ত কাজ সম্পন্নকারী ব্যক্তিও নিয়োগকর্তা হিসাবে গণ্য হইবেন।